You are here

কক্সবাজার,বাংলাদেশ, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩-  আজ স্বাস্থ্য ও  পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের  পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ( ডিজিএফপি) কক্সবাজারে মানবিক বিপর্যয়ে থাকা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য পরিবার পরিকল্পনা কৌশল ২০২২-২০২৫ এর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এই কৌশলটি রোহিঙ্গা এবং পাশ্ববর্তী হোস্ট ( স্থানীয়) কমিউনিটির  নারী এবং মেয়েদের মধ্যে কমিউনিটি ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পৃক্ততা এবং সেবাকেন্দ্র ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের মাধ্যমে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহের চাহিদা বাড়ানোর উপর একটি রুপরেখা তুলে ধরে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের নেতৃত্বে, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এর কারিগরি সহায়তায় এবং কক্সবাজার হেলথ সেক্টর এবং এসআর এইচ ওয়ার্কিং গ্রুপের অংশগ্রহনে এই কৌশলটি গত অক্টোবর ২০২২ সালে অনুমোদিত হয়।

ক্যাম্পে কর্মরত স্বাস্থ্য খাতের পার্টনারগণ ক্যাম্পে অবস্থিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সমূহ এবং নারী বান্ধব সেবা কেন্দ্রগুলোতে যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছেন। বিগত ৫ বছরে পরিবার পরিকল্পনা সেবার চাহিদা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবলমাত্র ২০১৮-২০২২ সালের মাঝে স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র সমূহে পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতি গ্রহণে সেবাগড়হীতার সংখ্যা আনুমানিক ২০০% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি যে শুধুমাত্র সেবা প্রাপ্যতার বিস্তার এবং প্রশিক্ষিত সেবা প্রদানকারীদের জন্য হয়েছে তা নয়, সেই সাথে কমিউনিটির মানুষদের মধ্যে এ সেবা সম্পর্কে প্রচারনা, বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে এর প্রয়োজনীয়তার সম্পর্কে  সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে কুসংস্কার এবং ভুল ধারণা দূর করতে বিভিন্ন রকম সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমগুলোই এ কাংখিত অবস্থায় আসতে ভুমিকা রেখেছে।

ড, আশরাফী আহমেদ,অতিরিক্ত সচিব স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়, অনুষ্ঠানের প্রধান অথিতি হিসেবে বলেন, “সকলের জন্য পরিবার পরিকল্পনার সেবাকে আরো সহজপ্রাপ্য/সুলভ ,স্ব ইচ্ছা ভিত্তিক, এবং পছন্দসই করার জন্য ২০২২ - ২০২৫ এর এই বহু বার্ষিক কৌশল মানবিক কাজে কর্মরত ( হিউমানিটারিয়ান) পার্টনারদের দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। আমি ইউএনএফপিএ এবং অন্যান্য পার্টনারদের তাদের কঠোর পরিশ্রম এর জন্য সাধুবাদ জানাই এবং এই কৌশলপত্রটি সেবাদানকারী এবং পরিকল্পনাকারীদের মানবিক প্রচেষ্টাকে আর উন্নত করার জন্য লাভজনক উৎস হিসেবে কাজ করবে বলে আমি আশা রাখি।”

ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের, রিপ্রেজেন্টেটিভ মিস ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের সাথে একটি ফলপ্রসূ পার্টনারশীপে একটি কৌশলপত্র প্রণয়নের কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত । এই কৌশলপত্রটি কমিউনিটির চাহিদা, সেবাকেন্দ্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি, পার্টনারশীপ এবং কার্যকারীতা/সক্ষমতা নিশ্চিত করতে এডভোকাসী এবং সমন্বয়ের উপর গুরুত্বআরোপ করে। রোহিঙ্গা নারীদের মাঝে পরিবার পরিকল্পনার বাড়তি চাহিদা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, স্বেচ্ছায় সেবা গ্রহণ, অধিকার ভিত্তিক এবং মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার কৌশল সমূহ তাদের জীবন উন্নত করার কাজ করে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, মিস গুইন লুইস বৃহৎ পরিসরে, নারীদের জন্য সমন্বিত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার উপর  গুরুত্বারোপ করে বলেন,” নারী এবং কিশোরীদের তাদের মৌলিক সামাজিক পরিষেবা প্যাকেজের অংশ হিসেবে  পরিবার পরিকল্পনা তথ্য প্রদান করতে হবে যাতে তারা তাদের পরিবারের স্বাস্থ্য এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়। পরিবার পরিকল্পনা নারীদের ক্ষমতায়ন করে এবং তাদের পরিবারকে দারিদ্র মুক্ত করতে সহায়তা করে।”

অনুষ্ঠানে অন্যান্য অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, ড: মো: বশিরুল আলম, অতিরিক্ত সচিব এবং মহাপরিচালক, ইসলামিক ফাওন্ডেশন,আব্দুস সালাম খান, যুগ্ন সচিব, (পরিকল্পনা শাখা), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়,  ডা. নুরুন্নাহার বেগম, লাইন ডিরেক্টর (সিসিএসডিপি), ডিজিএফপি; শামসু দৌজা, অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ সচিব); ড. পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য, সহকারী পরিচালক,পরিবার ও পরিকল্পনা, কক্সবাজার; ড. মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন,কক্সবাজার; ড. সাইদ রুবাইয়াত, কান্ট্রিডাইরেক্টর, আইপাস এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিগণ, সেই সাথে জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাসমূহের প্রধান এবং প্রতিনিধিগণ, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারী সংস্থাসমূহও (এনজিও) উপস্থিত ছিলেন।